জনগণকে সেবা করার সুযোগ দিতে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক নৌকায় ভোট চাইলেন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বুধবার বিকেলে রংপুর জিলা স্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত জনসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নৌকায় ভোট চান তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘নৌকায় ভোট দিয়ে জনগণ দেশের স্বাধীনতা পেয়েছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেই দেশের উন্নয়ন হয়। জনগণের ভাগ্য পাল্টেছে, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছেছে এবং আওয়ামী লীগের সমর্থনে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘একমাত্র নৌকা মার্কা ক্ষমতায় আসলেই দেশের উন্নতি হয়। কৃষকের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়। নৌকা মার্কায় ভোট আছে বলে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ গেছে, বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে, এগিয়ে যাবে। কাজেই নৌকায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে আবারও আপনারা আপনাদের সেবা করার সুযোগ দেবেন। সেটাই আমি আপনাদের কাছে চাই।’ এ সময় প্রধানমন্ত্রী সবাইকে হাত তুলে প্রতিশ্রুতি দেওয়ার অনুরোধ করলে সবাই সমস্বরে দুই হাত তুলে প্রতিশ্রুতি দেন।
গত সাড়ে ১৪ বছরে বাংলাদেশ বদলে গেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই বদলে যাওয়া বাংলাদেশ আরও উন্নত হবে। উন্নয়নশীল দেশ, এর পরে উন্নত দেশ। ডেল্টা প্লান করে দিয়েছি। সবক্ষেত্রে দেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে। আজকের তরুণ প্রজন্মই হবে আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। তারাই দেশকে আরো সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে এবং আরও উন্নত করবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নৌকা মার্কায় ভোট দিলে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয়, সেটা আমরা প্রমাণ করেছি। আওয়ামী লীগ আমলে কোনো মঙ্গা হয়নি। ২০০১ সালে খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে দুই হাতে টাকা পয়সা লুট করে। সে ও তার ছেলেরা মিলে এদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলে। ২০০৯ সালে আমরা ক্ষমতায় আসার পরে মানুষের আর কোনো কষ্ট হয়নি।’
এ সময় বিএনপি এবং তাদের সহযোগীদের বিভিন্ন সন্ত্রাস ও অপকর্মের কঠোর নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এখানে একটা গোষ্ঠী আছে- যারা সব সময় বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে খেলে। জাতির পিতাকে হত্যার মধ্য দিয়ে সেই খেলা শুরু হয়েছিল। বার বার ক্ষমতা দখল আর হত্যা ক্যু ষড়যন্ত্রের রাজনীতি।’
প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, ‘রাস্তায় চলন্ত বাসে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে, এরা কী মানুষের জাত ? ক্ষমতায় থাকতে লুটপাট করে খায়, আর ক্ষমতায় বাইরে থাকলে ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। রাস্তাঘাট কেটে দিয়েছে, রাস্তার পাশের গাছ কেটেছে, আর পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করেছে। নতুন রেল কিনেছি, পুড়িয়ে দিয়েছে। বাস কিনেছি, পুড়িয়ে দিয়েছে। ওই খালেদা জিয়া ও তার কুপুত্র তারেক জিয়া জ্বালাও পোড়াও ধ্বংস করতে পারে। এরা মানুষের কল্যাণ করতে জানে না। দেশের টাকা পাচার করে বিদেশে নিয়ে এখন সেই টাকা ব্যবহার করে যাচ্ছে। কোত্থেকে আসে এত বিলাসিতা! সেটাই আমার প্রশ্ন।’
তিনি বলেন, এরা এতিমের অর্থ আত্মসাৎ করেছে, দেশের মানুষের টাকা আত্মসাৎ করেছে। তারেক রহমান ও স্ত্রী জোবাইদা রহমানের দুর্নীতির মামলায় আজ আদালতের রায়ে ৯ বছর ও ৩ বছর করে কারাদণ্ড প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তাদের দুর্নীতির মামলা তো আমরা করিনি। তাদের প্রিয় ইয়াজউদ্দিন-ফখরুদ্দিন-মইনুদ্দিন করেছে। সেই মামলায় তারা শাস্তি পেয়েছে।’
সমাবেশে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কোষাধ্যক্ষ এইচ এন আশিকুর রহমান সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক এ কে এম সায়াদত হোসেন বকুল প্রমুখ। সভায় সভাপতিত্ব করেন রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ড. দেলোয়ার হোসেন। মঞ্চে আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।