1. [email protected] : Renex Lab : Renex Lab
  2. [email protected] : Shuvo Khan : Shuvo Khan
মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০:৫৯ অপরাহ্ন

গাড়ি ভাড়া না থাকায় মায়ের লাশ নিয়ে কাঁদছিল দুই বোন, অতঃপর …

নিজস্ব সংবাদদাতা
  • বুধবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২১

মা দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগে ভুগছিলেন। প্রয়োজনীয় টাকা না থাকায় করোনার এই সময়ে দিনমজুর বাবার পক্ষে চিকিৎসা চালানো সম্ভব হয়নি। অবস্থা গুরুতর হলে চার দিন আগে দুই বোন মাকে নিয়ে যায় ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার রাতে মারা যায় মা। মরেও যেন শেষ রক্ষা হয়নি।

এ অবস্থায় মরদেহ বাড়িতে নিতে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে পরিবারটির। দুই বোন জোর হাতে হাসপাতালে আগত অনেককেই অকুতি-মিনতি করে লাশটি গ্রামের বাড়ি পৌঁছে দিতে বললেও কারো মন গলেনি। এদিকে দালাল চক্ররা লাশ বাড়ি পৌঁছে দিতে কৌশল এঁটে লাশ আটকে রাখার হুমকি দেয়। ওই সময় হাসপাতালের বারান্দায় অঝোরে কাঁদতে দেখে ‘হেল্প প্লাস’ নামে একটি সংগঠন এগিয়ে আসে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষকের টাকায় অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে অবশেষে লাশ পৌঁছে দেওয়া হয় গ্রামের বাড়িতে।

জানা যায়, মৃত ওই নারী হচ্ছেন- ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার তারুন্দিয়া ইউনিয়নের গাবরবোয়ারি গ্রামের দিনমজুর নুর ইসলামের স্ত্রী মিনারা বেগম (৫৫)। মিনারা বেগম দীর্ঘদিন হৃদরোগসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। চার দিন আগে অবস্থা গুরুতর হলে নেওয়া হয় ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে রেখেই দিনমজুর স্বামী নুর ইসলাম টাকার যোগাড় করতে গ্রামে চলে যান।

স্ত্রীর কাছে রেখে যান দুই মেয়ে সরাইয়া (১৮) ও সুমি (১২)কে। গত সোমবার রাতে তাদের মায়ের অবস্থার অবনতি হলে বাবার সঙ্গে যোগাযেগ করে। বাবা আসার পরপরই মারা যান মা মিনারা বেগম। ‘মরার ওপর খাড়ার ঘা’-এবার লাশ বাড়িতে নিতে বেকায়দায় পড়ে পরিবারটি। যেকোনো বাহনে নিতে টাকা প্রয়োজন প্রায় ৫ হাজার। কানাকড়িও হাতে না থাকায় লাশের পাশে বসেই অঝোরে কান্না করে দুই মেয়ে। দালাল চক্ররাও লাশ পৌঁছে দিতে বায়না ধরে।

এই জন্য তারা দাবি করে ৪ হাজার টাকা অন্যথায় মরদেহ হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাওয়ার ভয় দেখায়। এমন অবস্থা জানতে পেরে দুই বোনের পাশে দাঁড়ায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হেল্প প্লাস। নিহত নারীর দেবর শফিকুল ইসলাম জানান, হাসপাতাল থেকে তাঁর ভাতিজিরা জানায়, কিছু লোক তাদের মায়ের লাশ পৌঁছে দিতে চার হাজার টাকা দাবি করছে।

পরে ওইসব লোকেদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানায়, দ্রুত টাকা না নিয়ে আসলে লাশ শ্মশানে নিয়ে যাবে। তখন এ খবর পায় হেল্প প্লাস নামে একটি সংগঠন। তারা হাসপাতারে পৌঁছে লাশ বাড়িতে নিয়ে আসেন।

ওই সংগঠনের সদস্য অলক সরকার জানান, মায়ের লাশ বাড়িতে পৌঁছাতে তাঁদের হাতে কোনো টাকা ছিল না। পরে একজন ব্যক্তি এগিয়ে এসে বলেন, তিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে অ্যাম্বুলেন্সের ৪ হাজার টাকা দিতে চান। এই অবস্থায় লাশ বাড়ি পৌঁছে দেই।

আরও পড়ুন...
স্বত্ব © ২০২৩ প্রিয়দেশ
Theme Customized BY LatestNews